বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:০৯ পূর্বাহ্ন
সিংগাইর ( মানিকগঞ্জ ) প্রতিনিধি : পুষ্টিকর সবজি ও মিষ্টি সুস্বাদু ফল হওয়ায় প্রতিটি এলাকাতেই দিনদিন পেঁপে চাষের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অল্প সময়ে অধিক লাভবান হওয়ায় মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার প্রতিটি এলাকাতেই এখন দিগন্ত জুড়ে পেঁপে গাছের সবুজ সমারোহ শোভা পাচ্ছে। তেমনি উপজেলাতে পেঁপে চাষে আগ্রহ বেড়েছে। এখানকার উৎপাদিত পেঁপে জেলার চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বাজারগুলোতে বিক্রি করা হচ্ছে। সবজির চাহিদা মেটানোর পাশপাশি পেঁপে চাষ করে হাজারো পরিবারে হচ্ছেন স্বাবলম্বী।
সরেজমিন গিয়ে বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি পেঁপে গাছেই থোকা থোকা পেঁপে শোভা পাচ্ছে। চাষিরা গাছ থেকে পেঁপে তুলে এনে তা বাজারজাত করছেন। সিংগাইর উপজেলার চর নয়াডাঙ্গী গ্রামের মো. জয়নুল আবেদীন বলেন, এ বছর আমি ৮ বিঘা জমিতে পেঁপে চাষ করেছি। এতে কীটনাশক, শ্রমিক খরচসহ মোট খরচ হয়েছে দুই লাখ টাকার টাকা উপরে। প্রথম তোলাতে দেড় লাখ টাকার পেঁপে বিক্রি করেছি। আশা করি এভাবে ফলন হলে বাজারের দাম ভালো থাকলে খরচ বাদে ১০ লাখ টাকা লাভ হবে। আরেক পেঁপে চাষী মেদুলিয়া গ্রামের ফজল হক জানান, তার ৬ বিঘা এ পর্যন্ত এক লাখ টাকার উপরে পেঁপে বিক্রি হয়েছে। কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে পেঁপে বিক্রি করে গেল বছরের বন্যা ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া সম্ভব হবে।
পেঁপের ভ্যারাইটি সম্পর্কে কৃষক নুরুল ইসলাম জানান, তিনি হাইব্রিড জাতীয় ‘রেডলেডি’পেঁপে বেশি লাগিয়েছেন। এটি গোল আকারের পেঁপে। এছাড়া আকারে বড় এবং সুস্বাদু জাতের শাহী ইন্ডিয়ান পেঁপে তার জমিতে রয়েছে। তিনি জানান, তিন বিঘা জমিতে পেঁপের আবাদ করেছেন। সাথী ফসল হিসেবে অন্যান্য সবজি ফসলও ছিল। জমি তৈরি, পেঁপের চারা, শ্রমিক খরচসহ ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। খরচের টাকা ওঠে গেছে। সবমিলে ৩ লাখ টাকা লাভ হবে বলেও তিনি জানান। একাধিক চাষির সাথে কথা বলে জানা যায় , পেঁপে পরিপক্ক হলে গাছ থেকে তোলার পর ক্ষেত থেকেই গাড়ীতে করে পাইকারি ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে সিংগাইর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবদি টিপু সুলতান সপন বলেন, এ মৌসুমে সিংগাইর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ৯৮৫ হেক্টর জমিতে পেঁপের আবাদ হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে এবার আবাদের পরিমাণ দ্বিগুণ। এ বছর ৩১ হাজার ৬০০মেট্রিক টন পেঁপে উৎপাদন হবে বলে সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি আরো জানান, মানিকগঞ্জ জেলার মধ্যে সিংগাইর উপজেলা তুলনামূলকভাবে উঁচু এলাকা। উঁচু জমি পেঁপে চাষের জন্য বেশি উপযোগী। কারণ, জমিতে পানি জমে গেলে পেঁপে গাছ মরে যায়। এ অঞ্চলে স্বাভাবিক বর্ষায় জমিতে পানি উঠে না। সিংগাইরের মাটি ও পরিবেশ পেঁপে চাষের জন্য বেশ উপযোগী। নিয়মিত প্রশিক্ষণের পাশাপাশি চাষীদের সার্বিক সহযোগিতা করায় চাষিদের পেঁপে চাষ আগ্রহ বাড়ছে বলেও জানান তিনি।